সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

খোঁজ : ষষ্ঠ পাতা

গল্প : খোঁজ - আলী হোসেন। ষষ্ঠ পাতা

( গল্প সংকলন : দ্বিতীয় পিতা )

শুরু থেকে পড়ুন

আগের পাতা                  গল্প সংকলন                 শেষ পাতা

ঋদ্ধি বলছি,

হ্যাঁ শুনছি। তুমি কি নেট ছেড়ে উঠে পড়েছ?

উত্তর করে না ঋদ্ধি। শুধু বলে, তুমি শনিবার আসতে পার?

আসবো! লিপির ভেতরটা যেন লাফিয়ে ওঠে। ঋদ্ধি অন্য প্রান্তে থেকেই উপলব্ধি করে সেই লাফিয়ে ওঠার উচ্চতা।

এসো। তবে, ভেবে দেখ, দেখার পর বন্ধুত্ব রাখার ইচ্ছা থাকবে তো?

দেখই না। তাছাড়া, বন্ধুত্বের মূলধন ঠিক থাকলে দেখার সঙ্গে তার সম্পর্কের কোন টানাপোড়েন তৈরি হয় না।

ঠিক তাই। ঋদ্ধিও সমর্থন করে। বলে, পৌছানোর গাইড লাইন এস.এম.এস-এ পৌছে যাবে; সময় মত।

কথা রেখেছিল ঋদ্ধি। লিপিও কথা রাখতে ছুটে এসেছে। শিয়ালদা ষ্টেশনে। ও এখন ওয়েটিং রুমে ওয়েট করছে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে ছোটার অভ্যাস ওর নেই। কিন্তু আজ বড় ইচ্ছা করছে। ইচ্ছা করছে ছুট্টে গিয়ে ঋদ্ধিকে জড়িয়ে ধরে। এখনই। সিনেমার সব-হারা কোন দুঃখি নায়িকার মত। কিন্তু কোথায় ঋদ্ধি? দেখছি না তো। তবে কি ও আসে নি? শনিবারে মানুষের চাপ কমই থাকে। কিন্তু আজ তার ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। এত লোকের মধ্যে ওকে চেনা যাবে!  এমন হোচ্ছে না তো, দুজনেই দুজনকে খুঁজে বেড়াছে? অস্থিরতার পারদ তাই ক্রমশঃ চড়তে থাকে। ফোনটাও বন্ধ। কী যে করে না? চোখ-মুখের চাহনিতে আভিমান ঝরে পড়ে লিপির। যদিও আগে এমন হয় নি কোনদিন। হঠাৎ আজ কেন এই আবেগ! তারও কোন জুতসই ব্যাখা নেই লিপির কাছে। এক-একবার মনে হচ্ছে ফিরে যাবে।

হ্যালো, আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?

হ্যাঁ ..., মানে ঋদ্ধি...

ঋদ্ধি৩৬৫, তাই তো?

হ্যা, ....কিন্তু...

কোন কিন্তু নেই। দ্রুত চলুন। বাইরে গাড়ী অপেক্ষা করছে।

ঋদ্ধি এলো না? লিপির কৌতুহলি প্রশ্ন। গলার স্বরে স্পষ্ট অভিমান।

উনি জরুরি কাজে অফিসে আটকে আছেন। ঘন্টা দু’য়েকের মধ্যে চলে আসবেন। এই যে, ওনার ফ্লাটের চাবি।

এবার বেশ ঘাবড়ে যায় লিপি। জাল পাততে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাছে না তো! দুঃশ্চিন্তা মাথাটাকে কুমোরের চাকের মত ঘুরিয়ে দেয়। কিন্তু ফেরারও তো রাস্তা নেই।

লিপি এখন গাড়িতে। চলছে দুরন্ত গতিতে। পাকসার্কাস কানেক্টার হয়ে বাইপাসের উদ্দ্যেশে। শীতের কপালেও বিন্দু বিন্দু ঘাম  জমে যায় লিপির।

ম্যাডাম, ঘাবড়াবার কারন নেই। আপনি ঠিকঠাকই যাচ্ছেন। বাবু সময় মত পৌছে যাবেন।

লিপি মনে জোর আনার চেষ্টা করে। তাছাড়া এ লাইনে তো ও নতুন না। সেকারনেই সাহসটা দ্রুত ফিরে আসে।

না না, ঘাবড়ানোর কি আছে। ঋদ্ধি আমার সব চেয়ে ভালো চ্যাট-ফ্রেন্ড। পরিচয়ও অনেকদিনের। শুধু সামনা সামনি দেখা হয় নি, এই যা। মনে মনে ভাবে, ঋদ্ধিও নিশ্চয় আমাকে ভালো বন্ধু ভাবে। না হলে কোন্ বিশ্বাসে ঘরের চাবি পাঠাবে!

শেষ পাতা

মন্তব্যসমূহ

রচনাকাল অনুযায়ী গল্প : পড়ুন 👉 এখানে ক্লিক করে

আলী হোসেনের জনপ্রিয় গল্পগুলো পড়ুন

নূরের জ্যোতি

কেমনে রাখবো কুল / পটল গাছে হয়না পটল /  না ছোঁয়ালে ফুল -- সুর করে  গান গাই গল্পটির ইউনিকোড ফন্টে খুব শিঘ্রি প্রকাশিত হবে। অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। Saturday, March 07, 2009 11:20:42 AM Ali Hossain H/O : Asraf Ali Nasker Brahmapur, Battala Bazar ( Near Post Office ) Kolkata-7000 96 Phone: 9432983876

খোঁজ : চতুর্থ পাতা

গল্প : খোঁজ - আলী হোসেন। চতুর্থ পাতা ( গল্প সংকলন : দ্বিতীয় পিতা ) শুরু থেকে পড়ুন আগের পাতা                          গল্প সংকলন                       পঞ্চম পাতা ঋষিতা আজ নেই। সশরীরে। কিন্তু সে তার জীবন থেকে একেবারে বিচ্ছন্ন হয়ে যায় নি। হয় নি, তা আরও একবার প্রমান হয়ে গেল। আজ। আজও সে হেরে গিয়ে জিতে এসেছে। সে চাইলেই বিট্টুকে সপাটে একটা ঘুষি চালিয়ে দিতে পারতো। নিদেনপক্ষে একটা চড়ও। সে সামর্থও তার আছে। কিন্তু তারপর? বিট্টুরা কিভাবে রিয়্যাক্ট করত! এখন ভাবতেই শিউরে ওঠে শরীর। মধ্য-পঞ্চাশের ঋদ্ধিনাথ। পাঁচ বছর হল ঋষিতাও গত হয়েছে। ঈশিতা তো থেকেও নেই। তাই কোন পিছুটান তো তার ছিল না। তবু পারে নি। আর এতেই কি প্রমান হল না ঝগড়া নেই মানে ঋষিতা নেই, এও সম্ভব। ঋষিতার মূল্যায়ন এভাবেই করে এখন। ভাবে, জীবনের ধর্মও জলের মত। যে পাত্রে যায়, তার আকার ধরে। সময়-পাত্রে এক সময় সবই সয়ে যায়। ঈশিতাকে হারিয়ে যে শুন্যতা, তাও এক সময় সয়ে গিয়েছিল।  ভরে দিয়েছিল ঋষিতাই। কিন্তু বাইপাসের...

মড়ক - আলী হোসেন

মড়ক আলী হোসেন      কোনটা সময় আর কোনটা অসময়, সময়টা চলে না গেলে যেন বোঝা যায় না। বলা ভালো, ঠিকঠাক বোঝা যায় না। বিজ্ঞজনেরা তো তা-ই বলে। রতন বিজ্ঞজনও নয়, সময়ের গলিঘোঁজ খুঁজে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও তার কম্ম নয়। তবে তার সময় যে ভালো যাচ্ছে না, সে বিলক্ষণ জানে। জানে বলেই বোধ হয় বিষন্ন হয় মন, কখনও সখনও ভারিও। বিশেষ করে বাড়ির উল্টোদিকের ফুটে আকাশ ছোঁয়া মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানির বিল্ডিংটা দেখলেই তার বুকের ভেতরটা যেন চিনচিন করে ওঠে।      কিন্তু মন খারাপ করে যে কোন লাভ নেই। বাবা পরেশ পাড়ুই বলতেন, ‘কপালের লিখন বল বা ভাগ্যের চাকা – কোনটারই নিয়ন্ত্রন আমাদের হাতে নেই’। রতনেরও তাই মনে হয়। না হলে কি আর ওকে মোটর মেকানিক হয়ে জীবন কাটাতে হয়? সারাদিন গ্যারেজে কাজ, তারপর কালিঝুলি মেখে ভূত হয়ে বাড়ি ফেরা। কবে কবে যেন গায়ের রংটাই গেল পালটে। মা বলে, বাবার মতই গায়ের রঙ ছিল ওর। পড়াশুনায়ও দারুণ। বাবার ইচ্ছা ছিল, ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার হবে; রতনও তাই ভাবতো। কিন্তু ভাবলেই কি আর সব হয়? কপালই তো ডাঁড়াশের ইঁদুর গেলার মত মোড়া মেরে ভরে দিল গ্যারেজে। তাই ডাক্তার হয়ার স্বপ্ন, ভাঙলো মোটর মেকানিক হয়ে। ...